কাশিপুরের দেওভোগ বাংলাবাজার ডাইং সংলগ্ন মাঠের পাশেই অবস্থিত সেলিমের চায়ের দোকান যা স্থানীয়দের কাছে আইপিএল ক্রিকেট জুয়া খেলার দোকান হিসেবে সর্বজন পরিচিত। আর সেই দোকানেই সর্বক্ষন আড্ডা চলে রাজু প্রধানগংদের। যেখানে বসেই ম্যাপ তৈরী হয় এলাকাসহ আশপাশে বিভিন্ন মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রন,চুরি,ছিনতাই,ডাকাতি এবং নিরীহ মানুষকে হয়রানীসহ যাবতীয় কর্মকান্ড। যার মুলে কাশিপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিয়াজ প্রধানের ছেলে রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর সদস্যরা। আর এ বাহিনীর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছে প্রভাবশালী এক নেতা ভাগিনা এবং বিশেষ ব্যক্তি। আউয়াল ফকিরের বাড়িতে তার পুত্রবধুর ঘরে চুরির ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিয়াজ প্রধানের ছেলে রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করা স্থানীয়রা জানান, প্রায় বছর খানেক পুর্বে এ বাড়িতে প্রবেশ করে একটি স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয় এ বাহিনীর সদস্যরা। আর মাঠে কোনে অবস্থিত সেলিমের চায়ের দোকানটি যেন ওদের জন্যই স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে প্রতিনিয়ত চলছে আইপিএল ক্রিকেটের জুয়ার আসর। যে আসর থেকে রাজু ও সাজু প্রধান বাহিনীর সদস্যরা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যে কারনে সেলিমের চায়ের দোকানটি স্থানীয়দের মাঝে সেলিম আইপিএল এর দোকান হিসেবে সর্বজন পরিচিতি লাভ করেছে।
রিয়াজ প্রধানের দুটি ছেলেই র্যাব ও পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক মামলার আসামী। দেওভোগ নুর মসজিদ,বাংলাবাজার ডাইংসহ আশপাশ এলাকাবাসীর কাছে ভয়ংকর ও আতংকের নাম রাজু ও সাজু প্রধান। মাদক বিক্রি,চুরি,ডাকাতি,ছিনতাইসহ এমন কোন কর্ম নেই এ দু’সহোদরের মাধ্যমে হয়না। আর এ দু’সহোদরের বিভিন্ন অপকর্মে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের এক শীর্ষ নেতার ভাগিনা ও একজন বিশেষ লোক। গত ৩রা জুলাই উক্ত এলাকায় আউয়াল ফকিরের বাড়িতে তার পুত্রবধুর ঘরে চুরির ঘটনায় অভিযোগের সুত্রে রাজু প্রধান এখন পুলিশের হেফাজতে থাকলের তার সহযোগী সেকেন্ড ইন কমান্ড একই এলাকার এবাদল মিয়ার ছেলে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক মামলার আসামী আফজাল। নিজাম ড্রাইভারের দুই ছেলে রাসেল ও রাশেদ, এক সময়ের পতিতা সর্দারনী নার্গিসের জামাই সবুজ। বাংলাবাজার ডাইংয়ের সামনে একটি অফিস নিয়ে রাজু প্রধান,সাজু প্রধান,সেই নেতার ভাগিনা ও সেই বিশেষ ব্যক্তি,খান সুমন,লাভলু @ ফেন্সি লাভলুসহ ৫/৬ জনকে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের আড্ডা। আর সাধারন মানুষকে ভীতি দেখানোর জন্য চলছে অব্যাহত হুমকী। স্থানীয়রা জানান,রাজু গ্রেফতার হলেও তার অফিসের চারপাশে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরাগুলো এখনও পর্যন্ত খোলা হয়নি। তাছাড়া রাজুর সহযোগিদের মধ্যে আফজাল,রাসেল ও রাশেদ রকি হত্যা মামলার অন্যতম আসামী হলেও পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার না করায় স্থানীয়দের মাঝে রয়েছে ভীতি।
এ দিকে ভয়ংকর রাজু প্রধানকে আটকের পর বেড়িয়ে আসছে ওদের যাবতীয় অপকর্মের ফিরিস্তি। রাজু প্রধানের রাজু/সাজুগংদের এভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠার পেছনে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের এক শীর্ষ নেতার ভাগিনা ও সেই বিশেষ লোকটিকে দায়ী করে অনেকেই বলেন,তাদের উভয়ের মদদে ওরা আজ অধিক বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয়ভাবে ওরা যে অপরাধকর্ম করে বেড়ায় এবং আানাচে-কানাচে যে মাদকদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে সেখান থেকে নেতার ভাগিনা এবং বিশেষ ব্যক্তিটি মোটা অংকের মাসোহারা নেয়। শুধু তাই নয়,রাজু প্রধানের কোন মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের হাতে মাদকসহ আটক হলে তাকে টাকা বিনিময়ে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে রাখেন নেই নেতার ভাগিনা ও বিশেষ ব্যক্তিটি।
উক্ত এলাকার আতংকিত ভয়ংকর রাজু ও সাজু প্রধান ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা জুয়েল প্রধানের ভাতিজা এবং রাজুর সেকেন্ড ইন কমান্ড আফজাল অপর যুবলীগ নেতা রাজু প্রধানের আপন বড়ভাইয়ের ছেলে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান,ভাতিজাদের এরুপ অপকর্মের কারনে উভয় চাচা জুয়েল প্রধান ও রাজু প্রধান তাদের পরিবার থেকে প্রায় ১৫/১৭ বছর যাবত আলাদা রয়েছে। অন্যের দোষ নিজেদের উপর নিতে নারাজ উভয় চাচা। তাছাড়া উভয় চাচা স্থানীয় পঞ্চায়েতের সাথে সম্পৃক্ত তাই তারা স্থানীয় সমাজ নিয়ে বসবাস করেন কোন সমাজ বিরোধী ব্যক্তির সাথে তারা সর্ম্পক রাখেন না বলেও জানান স্থানীয় অনেক বাসিন্দা।
এ দিকে নুর মসজিদ এর পাশে আদর্শনগরের কিশোরগ্যাং এর হাতে নিহত শরিফ মাদবর হত্যাকান্ডকে পুজি করে অনেক সাধারন মানুষকে উক্ত মামলার আসামী বানানোর ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ রাজু,সাজু প্রধানগংরা। শরিফ মাদবর হত্যা মামলার অন্যতম আসামী লালন শাকিলের সিমেন্টের দোকানের তালা ভেঙ্গে সেখানে রক্ষিত মালামালগুলোও লুটপাট করেছে এ রাজু ও সাজু প্রধানরা। এছাড়া একটি ব্যাটারী চালিত রিক্সা আটক করে মালিকের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় এবং পরবর্তীতে আরেকজনকে জিম্মা রেখে উক্ত রিক্সাটি ৩৩ হাজার টাকায় কিস্তি হিসেবে অন্যত্র বিক্রি করে এ বাহিনীর সদস্যরা। গত ১০/১২ দিন পুর্বে এ বাহিনীর দুই মাদক ব্যবসায়ীর সাথে ঝগড়া লাগলে একজনের পক্ষ নিয়ে অপর মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়ে ঘরে থাকা মুল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে আসে তারা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার আসলে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন রাজু প্রধান। পরবর্তীতে ওদের সাথে থাকা সেই নেতার ভাগিনা ও বিশেষ ব্যক্তিটি মারামারি হওয়া দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আবারো একত্রিত করে দেয় বলে জানায় স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের দাবী বর্তমানে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের হাতে আটক ভয়ংকর এ রাজু প্রধানকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার দলের প্রতিটি সদস্যর নাম জেনে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হোক এবং সেলিমের আইপিএল’র জুয়ার দোকান হিসেবে পরিচিত সেলিমের চায়ের দোকান বন্ধ কওে স্থানীয় বিভিন্ন বয়সী মানুষকে জুয়াসহ মাদকের কড়াল গ্রাস থেকে রক্ষার্থে জেলা পুলিশ সুপারের সদস্য হস্তক্ষেপ কামনা করেন ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের প্রতিটি মানুষ।