নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপি একসময় শক্তিশালী হলেও বর্তমানে যোগ্য নেতৃত্বের কারনে এখন আর আগের মতো নেই।তবে মাঠ পর্যায়ে এখনো বিএনপির সমর্থন ব্যপক ভাবে রয়েছে।
বর্তমানে বক্তাবলীতে আওয়ামী লীগের অনেকটা জনসমর্থন ও কর্মী বেড়েছে বিএনপির যোগ্য নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারনে।কারন অনেকে দল ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে। এক সময় বক্তাবলীতে আওয়ামী লীগের কর্মীর অভাবে মূলদল সহ অঙ্গসংগঠনের কমিটি গঠন করতে হিমশিম খেতো। এখন আওয়ামী লীগের ২ টি কমিটি গঠন করে জমা দেয়া হয় অনুমোদনের জন্য।এদের বেশীর ভাগ বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জানান,বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির যোগ্য নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারনে বর্তমানে বিএনপি স্তমিত হয়ে পড়েছে। দলীয় ও জাতীয় অনুষ্ঠান গুলো এখন আর বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে পালন করা হয়না।তবে যুবদল ও ছাত্রদল মাঝে মধ্যে পালন করে থাকে।সেসব অনুষ্ঠানে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির হাতে গোনা শীর্ষ ২/১ কে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
একটি সুত্র হতে জানা যায়, ২০১০ সালের ১ জুলাই কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে মধ্যনগরে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সেই কাউন্সিলে সুমন আকবর কাউন্সিলরদের ভোটে আলাউদ্দিন বারী,জালালউদ্দিন জালাল,নুর হোসেনকে পরাজিত করে সভাপতি নির্বাচিত হন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে এড আল আমিন সিদ্দিকী আগুন কাউন্সিলরদের ভোটে হাসান আলী,মনির মাষ্টার,ইব্রাহীম আজাদকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মঞ্জুর আলী মঞ্জু কাউন্সিলরদের ভোটে জামাল হোসেন কে পরাজিত করে নির্বাচিত হন।
সাধারণ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মনে করেছিলেন নতুন নেতৃত্ব দলকে চাঙ্গা ও শক্তিশালী করে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারবে।কিন্তু সাধারণ নেতাকর্মী ধারনাকে ভূল প্রমানিত করে দলের ভিতর বিভাজন সৃষ্টি, স্বজন প্রীতি, একে অন্যের প্রতি অবিশ্বাস করে দলকে দূর্বল করে গেছেন।
নেতাকর্মীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমরা নিশ্চিত ছিলাম একসময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে উচ্চ ডিগ্রি ধারী,তুখোর ছাত্রনেতা এড আল আমিন সিদ্দিকী আগুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন। কিন্তু তিনি সেই সফলতার স্বাক্ষর রাখতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। গত ১২ বছরে একটি পূনাঙ্গ বর্ধিত সভা করতে পারেননি সুমন আকবর – আল আমিন সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আসা বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপি।
সভাপতি সুমন আকবর প্রথম প্রথম একটু নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর রাখলেও পরবর্তী সময়ে সেটা ধরে রাখতে পারেননি।
এমনকি দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুর আলী মঞ্জু , সহ সভাপতি সমন আলী বেপারী,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুকুল ইসলাম ফারুক,কোষাধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল চিশতী,বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক রজ্জব আলী ভান্ডারী,সদস্য দেলোয়ার হোসেন দেলু ও আব্দুল মান্নান মৃত্যুবরন করলেও একটি শোক সভা আয়োজন করতে পারেনি বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক সহ কমিটির সদস্যরা।
উল্লেখিত নেতারা মৃত্যুবরন করলেও তাদের রুহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করতে পারেনি সুমন আকবর ও আল আমিন সিদ্দিকী আগুনের নেতৃত্বে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবদল নেতা তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন,বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষ নেতারা তাদের পদ ধরে রাখতে থানা বিএনপির নেতাদের পা চাটতে পিছপা হননা। এখন তারা ইউনিয়নে কর্মসূচি পালন না করে থানা ও জেলা কমিটির অনুষ্ঠানে হাজির হতে প্রতিযোগিতা শুরু করে দেন।
বিএনপির এক নেতা বলেন,আগামী কমিটিতে যেন বক্তাবলীতে বসবাস করে দলের পিছনে মেধা,শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে এমন লোককে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক সহ গুরুত্বপূর্ণ পদ দিতে হবে।ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরে বসবাস করে মৌসুমী পাখির মতো হঠাৎ করে চেহারা দেখাবে এমন লোককে শীর্ষ পদে দেয়া হলে মেনে নিবোনা।
বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল দিতে হবে।নেতাকর্মীরা ভোটাধিকারের মাধ্যমে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির আগামীতে নেতৃত্ব দেয়া নেতা নির্বাচিত করবে। কোন পকেট কমিটি মেনে নেয়া হবেনা।
যারা নেতৃত্বে আসবেন তারা যেন কর্মী বান্ধব, দলপ্রীতি,সভা,সমাবেশ,মৃত নেতাদের জন্য শোক সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল আয়োজন। দলীয়,জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের সকল অনুষ্ঠান পালনে দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে পারেন এমন দক্ষ ত্যাগী ও মেধাবী লোককে নেতা নির্বাচিত করতে হবে।
অনেকে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান কমিটিকে দল প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর হতে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে ব্যর্থ ও অযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন।
তারাই আবার চাচ্ছেন ত্যাগী,দক্ষ, মেধাবী ও হামলা মামলার শিকার হওয়াদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে তারাই বহাল থাকতে। এমনটি হলে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপি ধবংসের চরম স্তরে পৌছে যাবে বলে মনে করেন সাধারণ নেতাকর্মীরা।
এ ব্যাপারে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড আল আমিন সিদ্দিকী আগুন জাগো নারায়ণগঞ্জ ২৪.কমকে বলেন,যারা রাজনীতি করি দলের গঠনতন্ত্র মেনে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সাংগঠনিক নীতি মেনে দলের সকল কর্মসূচি দক্ষতার সাথে পালন করেছি।যারা বলে ঐক্যবদ্ধ করতে পারিনি আমি বলি ঐক্যবদ্ধ করা দায়িত্ব নয় ঐক্যবদ্ধ থাকা নিজ নিজ দায়িত্ব। আমি ও সভাপতি ২০০৯ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে ১৩ বছর যাবত দক্ষতার সাথে দল পরিচালনা করে আসছি।যদি আমাদের অদক্ষতা থাকতো দল কমিটি ভেংঙ্গে দিতো।কিন্তু তা হয়নি।কাজেই আমরা সফলতার ও দক্ষতার সাথে দল পরিচালনা করে সফল হয়েছি।
এ ব্যাপারে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আলী আকবর সুমন বলেন,আমি ও আল আমিন সিদ্দীকি কোন নেতা মারা গেলে পত্রিকার মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছি। তার প্রমান সাংবাদিকরা। আমি ও সাধারণ সম্পাদক দক্ষতার সহিত দল পরিচালনা করেছি। যারা এ রকম কথা বলে তারাই সভা সমাবেশে আসেনা। বড় বড় কথা বলে। বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির ইতিহাসে আমি ও আল আমিন সিদ্দিকীর নেতৃত্বে সবচেয়ে বেশী সফল।