মোঃ ওমর ফারুক, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি:- শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দখলকৃত সরকারি খাল খননের ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রাপ্ত ঠিকাদাররা গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা না করায় ঐ খাল গুলোর দুই পাশ ঘিরে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ স্থাপনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খাল দখল করে গড়ে ওঠা ঐসব অবৈধ স্থাপনা বাঁচাতেই খালগুলো খননের ক্ষেত্রে গড়িমসি করছে ঠিকাদারা। আর ভেকুর বদলে কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে খাল খননের নামে তামাশা করায় স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের শুরুতে প্রায় ৪১ কোটি টাকা ব্যয় করে শরীয়তপুরের বিভিন্ন উপজেলায় খাল খনন কাজ শুরু করে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর মধ্যে ভেদরগঞ্জ উপজেলাতে প্রায় ১০টি খাল খনন কাজ শুরু করে।
সরেজমনি ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ডিএম খালী ইউনিয়নের কাশিমপুর থেকে সখিপুর ইউনিয়নের বেপারী কান্দি পর্যন্ত প্রবাহিত খালটির খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে নিয়োগ প্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শহীদ এন্টারপ্রাইজ। এ খালটির খনন ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। কিন্তু এ খালটির সখিপুর বাজারের পেছনের উত্তর ও দক্ষিন পাশের অংশ ভেকু দ্বারা খনন করলেও মাঝখানের অংশ বাদ দিয়ে খনন কাজ স্থগিত করে ঠিকাদার। অথচ এ খালটির মাঝখানের অংশের দুই পাশ ঘিরে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক স্থাপনা। যার বেশীর ভাগই খালের জমি দখল করে গড়ে ওঠা ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানপাট।
আর ঐ অবৈধ স্থাপনার কারনেই খালটি দিয়ে নৌ-যান চলাচল করতে পারে না। পরে দীর্ঘ সময় ধরে গড়িমসি করার পর সিদ্ধান্ত হয় শ্রমিক দিয়ে খালটি খননের। আর বর্ষার পানি মধ্যেইে চার থেকে পাঁচজন শ্রমিক দিয়ে খাল খনন শুরু করে ঠিকাদার। কিন্তু পানির কারনে খাল থেকে শ্রমিকরা মাটি তুলতে না পারায় কোন রকম খুড়াখুড়ি করেই কাজ শেষ করছে তারা। আর দখলে যাওয়া এ খালটি অগভীরই রয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা খসরু সরদার বলেন, খননের অভাবে ধীরে ধীরে এ খালটি অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে। পানি প্রবাহের অভাবে নৌ-যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এবার খাল খনন শুরু হলেও মাঝখানের দখলকৃত অংশ খননের ক্ষেত্রে ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডর লোকজন গড়িমসি করছে। এ খালটি গভীর ভাবে খনন করা খুবই জরুরি।
আফসার মুন্সি বলেন, খালটি সঠিকভাবে খনন করা হলে একদিকে যেমন খালটি দিয়ে সুষ্ঠ পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে খালের মধ্যে থাকা অবৈধ স্থাপনা গুলোও উচ্ছেদ হবে। আর বর্তমানে যেভাবে খালটি কাটা হচ্ছে এর ফলে কোন প্রকার উপকার হবে না। খালটি আরো গভীর ভাবে খনন করা জরুরী।
ঠিকাদার মামুন মিয়া বলেন, খালটি খননের সময় আমাদের অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। পরে সমঝোতার মাধ্যমে খরচ বেশী হলেও লেবার দিয়ে কাজটি করছি। তাছাড়া ঐ খালটি খনন করলে পাশের রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলামকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।