নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীগঞ্জে খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসীর প্রতিরোধে ভেস্তে গেছে প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান। সরকারি কর্মচারীদের আবাসন প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জমি উদ্ধারে গতকাল দুপুরে এ অভিযান চালানো হয়।
দুপুর ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ফতুল্লার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজোওয়ান আহমেদের নেতৃত্বে আলীগঞ্জে ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযানে যান গণপূর্ত বিভাগের (পিডব্লিউডি) কর্মকর্তারা। এ সময় নারায়ণগঞ্জ পিডব্লিউডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী, ফতুল্লা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামানসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিল। অভিযানের কথা জানতে পেরে স্থানীয় লোকজন ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের খেলার মাঠে প্রবেশে বাধা দেয়। তারা মাঠের দাবিতে অনড় থেকে মানববন্ধন ও রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। একপর্যায়ে তাদের বাধার মুখে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পুলিশ অভিযান না চালিয়ে ফেরত চলে আসে।
নারায়ণগঞ্জ পিডব্লিউডির নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, সরকারি কর্মচারীদের আবাসান প্রকল্পের জন্য গণপূর্ত বিভাগের নিজস্ব জায়গায় ভবন নির্মাণ করা হবে। কিন্তু স্থানীয় লোকজন বেশ কিছুদিন ধরে নির্ধারিত জমিতে বিদ্যমান মাঠ ও এর আশপাশের জায়গা দখল করে রেখেছে।
তিনি বলেন, দুপুর ১২টার দিকে জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযানে গেলে আমাদের বাধা দেয়া হয়। আমরা ফিরে এসে স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আমরা তাদের বলেছি, আমাদের যে মাস্টারপ্ল্যান রয়েছে, সেখানেও মাঠ রয়েছে। সে মাঠটি হবে প্রকল্পের ভেতরে। বিদ্যুতের যে টাওয়ার রয়েছে ,সেই টাওয়ারের নিচে এ মাঠ বানানো হবে। প্রকল্পের আওতায় আড়াই একর জমির ওপর খেলার মাঠসহ প্রায় সাড়ে চার একর ভূমি উন্মুক্ত রাখা হবে।
আলীগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি ও ফতুল্লা আঞ্চলিক শ্রমিক লীগ সভাপতি কাউসার আহমেদ পলাশ বলেন, গণপূর্ত বিভাগ যে জায়গায় মাঠ রাখার কথা বলছে, সে বিষয়ে স্থানীয় লোকজন কিছু জানে না। তারা বলছে, বিদ্যুতের টাওয়ারের নিচে ১২০ ফুটের ছোট পরিসরের একটি মাঠ রাখা হবে। এটি হবে তাদের প্রকল্পের ভেতরে। এখানে বাইরের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা করতে পারবে না।
তিনি বলেন, টাওয়ারের নিচে নয়, আমাদের দাবি বর্তমানে যেখানে মাঠ আছে সেখানে থাকুক। প্রয়োজনে গণপূর্ত বিভাগ টাওয়ার সরিয়ে সেখানে ভবন নির্মাণের কাজ করুক। আলীগঞ্জের মানুষ তাদের ভবিষৎ প্রজন্মের কথা বিবেচনা করে মাঠ রক্ষার দাবি থেকে সরবে না।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজোওয়ান আহমেদ জানান, এ জায়গা আরো কয়েকটি সংস্থা থেকে ইজারা এনে অনেকে দখল করে রেখেছে। সবার কাগজপত্র দেখে যাচাই করার জন্য সাতদিনের সময় দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।