নির্বাচনের বাকী আর মাত্র ৩ দিন। ১১ নভেম্বর জেলার ১৬টি ইউনিয়নে ২য় ধাপের নির্বাচনে সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোট। এর মধ্যে প্রতিটি ইউপিতে চেয়ারম্যান-মেম্বার ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বারদের চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা। চেয়ারম্যান পদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মনোনীতদের মাঝে নৌকা প্রতিক বরাদ্ধ করেছেন। ১৬ ইউপির ১৫ ইউপিতেই আওয়ামীলীলীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে তৃনমুল আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। কিন্তু ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নে। এখানে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীর সাথে নেই সদর থানা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ ইউনিয়নের অনেক নেতৃবৃন্দ। সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজির আহমেদ,সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদউল্লাহ আল মামুন ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো.নাজির হোসেন ফকিরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তারা একাট্রা হয়ে বঙ্গবন্ধু তথা শেখ হাসিনার নৌকা ডুবাতে বিদ্রোহী প্রার্থী ফজর আলীর পক্ষে নিয়মিত মাঠে গনসংযোগ করে ভোট ভিক্ষা চাইছেন। অখচ কেন্দ্র থেকে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা থাকলেও তারা কিছুতেই তা কর্নপাত করছেনা। উক্ত নেতাদের এরুপ ভুমিকায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাড়িয়েছে সদর থানা আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিয়ে।
গোগনগরের অনেক আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বলছেন সভাপতি-সাধারন সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অন্যান্যরা দলের সাথে বিশ^াস ঘাতকতা করছে তার মুল নির্দেশদাতা হিসেবে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জের একজন এমপি। সদর থানা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা যে বিদ্রোহী প্রার্থী ফজর আলীর পক্ষালম্বন করে কাজ করছেন সে প্রসঙ্গে ইতিপুর্বে থানা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদউল্লাহ আল মামুন সেই নেতার নাম উচ্চারন করে বলেছিলেন,আমিসহ আমরা সবাই আমাদের বড়ভাই . নির্দেশেই ফজরের পক্ষে কাজ করছে। তিনি আমাদের যে নির্দেশনা দিবেন তা পালন করতে আমরা সকলে বদ্ধপরিকর।
এদিকে ৬ নভেম্বর রবিবারও নৌকার বিপক্ষে গিয়ে সেই ফজর আলীর পক্ষে ভোট চাইতে দেখা গেছে আল মামুন,মোসলেহউদ্দিন,নাজির ফকিরগংদের। আল মামুন সে অনুষ্ঠানে ফজরের পক্ষালম্বন করে বলেন, তিনি ( ফজর ) বিশাল বড় মনের মানুষ। তাই সবাই যেন তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। থানা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের এরুপ কথায় বিরুপ মন্তব্য শুরু হয়েছে গোগনগরের সর্বত্র। নৌকার বিপক্ষে কাজ করলে দল থেকে যে বহিস্কারের নির্দেশনা রয়েছে সেটা কর্নপাত করছেনা মামুন-নাজিরগংরা। কারন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের রাজনীতি উক্ত নেতার নির্দেশনা মোতাবেকই হয় বলে জানান নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃনমুলের নেতৃবৃন্দ। অথচ জেলা বা মহানগর এমনকি থানা আওয়ামীলীগের কোন কমিটিতে কোন পদ নেই উক্ত কর্তাবাবুর। তবু তার দাপুটে নির্দেশে এবার গোগনগরে নৌকা ডুবাতে অতিব্যস্ততা সময় কাটাচ্ছেন সদরের সেই নাজির-মামুনগংরা। আর তাদেওর এরুপ কর্মকান্ড সেই নবাব সিরাজউদোলার মির জাফরের কাহিনীকেও হার মানাচ্ছে। যেই দলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে তারা দিব্ব্যি রাজনীতি করছেন এবং টাকা কামাচ্ছেন অথচ দলের মনোনীত নৌকা প্রার্থীর বিপরীতে গিয়ে তারা বিদ্রোহী প্রার্থীর টাকার মোহে পড়ে দলের নীতি ও আদর্শকে বিসর্জন দিয়েছেন।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই প্রায় ১৫ দিন পুর্বে ঘোষনা দিয়ে বলেছিলেন যে, দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে কেউ কাজ করলে তাকে বহিস্কার করা হবে। কিন্তু সেই ঘোষনা এখনও ঘোষনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাতে নাজির-মামুন-নাজির ফকিরগংরা এখনও প্রস্তুত রয়েছে বঙ্গবন্ধুর নৌকা ডুবাতে। অথচ থানা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে নাম থাকা বিদ্রোহী প্রার্থী ফজর আলীকে বহিস্কার করে হাসি ও তামাশা সৃষ্টি করেছে জেলা আওয়ামীলীগ যা এখন জেলার সর্বত্র আলোচিত একটি ঘটনার মত। যেখানে নাজির-মামুনগংরা বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা প্রতিক নৌকা ডুবাতে উঠেপড়ে লেগেছে ফজর আলীর টাকা খেয়ে সেখানে সেই নাজির-মামুনগংদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো নামমাত্র কমিটিতে থাকা ফজর আলীকে বড়মাপের নেতা সাজিয়ে তাকে বহিস্কার করে জেলা রাজনীতিতে হাস্যরস তৈরী করেছেন জেলার নেতৃবৃন্দ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোগনগরের অনেক তৃনমুল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী জানান, যেই নেতার নির্দেশে নাজির-মামুনগংরা নৌকা ডুবাতে তৎপর তারা টাকার আদর্শে বিশ^াসী। তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শের রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে দলের সাথে বিশ^াসঘাতকতা এবং বেঈমানী করছে। ওরা দলের ভেতরে লুকিয়ে মোস্তাকের চেয়ে জঘন্যতম ব্যক্তি। কারন ওরা গোগনগরের রাজনীতিকে তিলে তিলে মৃত্যুও দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ওদের কারনে গোগনগর ও সদরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি ধ্বংসস্তুপে পরিনত করে তুলেছে। ২০১৬ সালেও ইউপি নির্বাচনে এরুপ বিশ^সঘাতকতা করে গোগনগর থেকে আওয়ামীলীগের নৌকা ডুবিয়েছিলো। ৫ বছর পর ২০২১ সালেও সেই ভাবে আবারও নৌকা ডুবানোর মিশনে নেমেছে উক্ত নেতার নির্দেশে ফজর আলীর টাকার মোহে পড়ে। তারা আরও বলেন,এবারের নির্বাচনেও যদি গোগনগরে নৌকা ডুবানো হয় তাহলে ভবিষ্যতে এখানে বঙ্গবন্ধু কিংবা শেখ হাসিনার নৌকার প্রতি কারোর আস্থা থাকবেন না। কারন সদর থানা আওয়ামীলীগে ও গোগনগর আওয়ামীলীগের রাজনীতি অর্থলোভী, নীতি ও আদর্শহীন নেতাদের কজ¦ায়। যারা দলকে নয় টাকাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।